আজ রবিবার, ১৯শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সোনারগাঁয়ে অবৈধ দখলদার আল মোস্তফা গ্রুপের বিরুদ্ধে ভূক্তভোগীদের প্রতিবাদ, ভাংচুর

মাজহারুল ইসলাম : প্রশাসনের নিরবতায় উত্তেজিত জনতা, ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিলো দখলদারদের অবৈধ সীমানা প্রাচীর। ঘটনাটি ঘটেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বৈদ্যেরবাজার এলাকায়। একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের পক্ষের লোকজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে চলছে চরম উত্তোজনা । যে কোন মুর্হুতে ওই এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছে এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ‘হেরিটেজ পলিমার এন্ড সেমি টিউবস লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানী নদী দখল ও সড়ক ও জনপদের জমি, সাহাপুর দিয়ে প্রবাহিত একটি খালমুখ দখল করে বালু ভরাট করছে। ৬শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘাট, সড়ক ও জনপদের রাস্তা দখলের সত্যতা পায় স্থানীয় প্রশাসন। এসময় বালু ভরাট ও টিনের তৈরি সীমানা প্রাচীর নির্মান বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। উত্তেজিত শত শত নারী পুরুষ টিনের তৈরি সীমানা প্রাচীর ভাংচুর করে। এলাকাবাসীকে ভাংচুরে উসকে দেওয়ার সন্দেহে কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা রোবায়েত হোসেন শান্ত ও বালু ভরাটে জড়িত জাহিদুল নামের দুজনকে আটক করে পুলিশ। পরে মুচলেকা দিয়ে আটককৃতদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, গত সোমবার বালু ভরাটের প্রতিবাদে এলাকাবাসী সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের সামনে মানব বন্ধন করে। পরে সবাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনু ইসলাম এর বরাবর স্বারক লিপি পেশ করেন। এলাকার বাসীর অভিয়োগ মানব বন্ধন ও স্বারকলিপি পেশ করার পরও প্রশাসন কোন উদ্যোগ গ্রহন না করায় , গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে কোম্পানী লোকজন সড়ক ও জনপদের রাস্তা দখল করে সীমানা প্রাচীর তৈরি করে। এতে রাস্তার পাশের দোকানগুলো পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, দোকানদারদের দোকান থেকে মালামাল সড়ানোর সুযোগ পর্যন্ত দেয়া হয়নি বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন। তারা জানান, রাস্তার পূর্বপাশে প্রায় ৪০-৬০ ফুট জায়গা সড়ক ও জনপদের হওয়া সত্ত্বেও কোম্পানী রাস্তার উপর জোড় করে সীমানা তৈরি করতে থাকে। এতে সাহাপুর গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর বিশেষ প্রভাব পড়ে বলে জানা যায়। জেলে সম্প্রাদায়ের হাজার হাজার জেলে ঘাট ব্যবহার করে মাছ শিকার করতে যায়। সে ঘাটটি বন্ধ করে দিলে তাদের জীবকিার উপর বিশেষ প্রভাব পড়বে এছাড়া ঘাটটি দিয়ে শত শত নারী পুরুষ নদীতে গোসল করে। হাজী আজিজুল্লাহ জানান, হিন্দুরা ২শত বছর যাবত এ নদীঘাট ব্যবহার করে আসছে। নদী দখল ও বালু ভরাটের কারনে এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষের জীবিকা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ নদী দিয়ে কাইকারটেক হাট, উদ্ধবগঞ্জবাজার ও মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার ব্যবসায়ীদের নদী পথে মালামাল পরিবহন ও যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক সাংসদ রেজাউল করিমের স্ত্রী সুরাইয়া করিম মুন্নীর সঙ্গে হাজী আজিজুল্লার একটি মামলা চলছিল। মামলা বিচারাধীন থাকাবন্থায় হাজী আজিজুল্লর অজ্ঞাতে মুন্নী বিরোধকৃত জমি হেরিটেজ পলিমার এন্ড ভেজিটেবলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল নিকট বিক্রি করে দেয়। আল-মোস্তফা মেঘনা গ্রুপের মালিক মোস্তফা কামালের ভাগনীর জামাই বিধায় সোনারগাঁয়ে তিনি জামাই মোস্তফা নামে পরিচিত।
ডা. আব্দুর রউফের লাঠিয়াল বাহিনী. বালু সন্ত্রাসী হোসেন মেম্বার, মঞ্জুর মল্লিক হিরো, অহিদুল্লাহ মেম্বার, জাহাঙ্গীর, হামিদুলসহ ৩০-৩৫জনের একটি সিন্ডিকেট ওই জমির পাশ্ববর্তী দোকানপাট ১৫দিনের মধ্যে উচ্ছেদ না করলে ভেঙ্গে ফেলার হুমকি দেয়। শুধু আজিজুল্লাহর বিরোধকৃত সম্পতিই নয় এলাকার নিরীহ প্রবাসী সাখাওয়াত হোসেন, মজিবুর রহমান, শাহজালালসহ প্রায় ১০-১২জনের জমি ক্রয় না করেই কৃষি জমি ও পাশ্ববর্তী মারিখালী নদী দখল করে এ বালু ভরাটের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ মোরশেদ আলম জানান, এলাকার শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।